নিকোলা টেসলা সম্পর্কিত অন্যান্য বৈজ্ঞানিকদের মতবাদ :
একবার আইনস্টাইন কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তি হতে কেমন লাগে?’
উনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘এর উত্তর আমার জানা নেই। আপনি নিকোলা টেসলা কে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন!’
খুব কম মানুষেই এটি জানেন যে তাকে বিজ্ঞানী ফ্যারাডের চেয়ার দেয়া হয়েছিল যা এখন পর্যন্তও অন্য কোন বিজ্ঞানীকে দেওয়া হয় নি । সে আজকের বিজ্ঞানিদের থেকেও অনেক আধুনিক ও আগামী সভ্যতার সৃজনশীল চিন্তার অধিকারী ছিলেন তাই তাকে ম্যান অফ দা ফিউচার খ্যাত বিজ্ঞানি নামে ডাকা হয় ।
ব্যক্তিজীবন :
৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার দীর্ঘাকার মানুষ ছিলেন তিনি। ছিলেন প্রচন্ড গর্বিত, চটপটে ও বুদ্ধিমান মানুষ। তার কাপড় পরিধান, চাল চালন উঠা বসা তাকে নিয়ে গিয়েছিল তখনকার সেলিব্রেটিদের তালিকায়। গবেষণার জন্য বিয়ে করেননি। তার ছিল অদ্ভুত কিছু সমস্যা। যেমন ইনসোমনিয়া, শুচিবাই অত্যাধিক গোছানো। শোনা যায়, ভদ্রলোক এক সপ্তাহে টানা ৮৪ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে কাজ করেছেন। এছাড়া দিনে তো মাত্র ৩ ঘণ্টার ঘুম তার অভ্যাস। তিনি ৩ সংখ্যাকে খুব ভালোবাসতেন এবং তিনি নাকি আকাশ থেকে তথ্য পেতেন তার গবেষণার জন্য!
টেসলার অজানা দিক:
১। টেসলা যখন পরিবেশবাদী:
টেসলা প্রাকৃতিক সম্পদের দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়া নিয়ে বেশ সোচ্চার ছিলেন এবং পুনরায় ব্যবহারযোগ্য জ্বালানীর সমর্থক ছিলেন। তাছাড়া তিনি কীভাবে প্রাকৃতিক শক্তি ব্যবহার করে জীবাশ্ম জ্বালানীর উপর থেকে চাপ কমানো যায় সেই বিষয়েও বহু গবেষণা করেছেন। এমনকি তিনি তার জিনের ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম বীজ তৈরি করার মতোও সফল গবেষণাও তার রয়েছে।
২। মানবতাবাদী টেসলা:
টেসলা কীভাবে মানুষের জীবন আরও উন্নত করা যায় সেই ব্যাপারে সব সময় সচেষ্ট ছিলেন। একজন প্রকৃত বিজ্ঞানীর মতো তিনি দিন-রাত শুধু গবেষণা নিয়েই পড়ে থাকতেন। তিনি কখনও আবিষ্কারের আর্থিক বা ব্যবসায়িক দিক নিয়ে ভাবতেন না। এ কারণে তার অনেক উদ্ভাবন এবং সামাজিক অবদান থাকা সত্ত্বেও শেষ জীবন তিনি চরম দারিদ্র্যের মাঝে কাটান।
৩। মার্কিন সরকার কর্তৃক টেসলার জিনিস বাজেয়াপ্ত:
টেসলা মারা যাওয়ার পর অফিস অব এলিয়েন প্রপার্টি (The Office of Alien Property) তার সমস্ত ব্যবহার্য জিনিস এবং নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করে। পরবর্তীতে এর বেশিরভাগই তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং কিছু জিনিস বেলগ্রেডে টেসলা যাদুঘরে দান করা হয়। মজায় ব্যাপার হলো, টেসলা ১৯৪৩ সালে মারা গেলেও এখনও তার কিছু ব্যক্তিগত নথিপত্র মার্কিন সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত অবস্থায় আছে।
জীবনাবাসন:
৮৬ বছর বয়সে ৭ই জানুয়ারি ১৯৪৩ সালে নিউইয়র্ক হোটেলের ৩৩২৭ নম্বর রুমে নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান এই সেরা আবিষ্কারক, বিজ্ঞানী।জানা যায় শেষ ১০ বছর সে হোটেলটিতেই থাকতো এবং মৃত্যু শরনাপন্ন অবস্থায় আর্থিক সংকটের দিনগুলোতে সে শুধুমাত্র দুধ ও বিস্কুট খেয়ে পাড় করেছিলেন । তার মৃত্যু তাকে দিয়েছে শান্তির চিরনিদ্রা আর আমাদের দিয়ে গেছেন সুন্দর ভবিষ্যৎ। তাই তো তাকে সম্মান জানাতে বহু গল্পে, সিনেমায় উঠে আসছেন তিনি আমাদের মাঝে। এই সময়ের সেরা উদ্যোক্তা এলন মাস্ক তার নামানুসারে ইলেকট্রিক গাড়ি কোম্পানির নাম দেন “টেসলা মোটরস”!
By মোঃ খুরশিদুল আলম শান্ত
তথ্যসুত্র :
- https://blog.voltagelab.com/%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE/
- https://bangla.bdnews24.com/kidz/2015/07/14/—1
- https://roar.media/bangla/main/science/the-wonder-of-electricity-tesla
- http://youthcarnival.org/bn/33-interesting-facts-about-nikola-tesla/